দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার ১০টি কারণ ও প্রতিকার এবং লক্ষণ

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চান? আমরা অনেক সময় কিছু অজানা কারণে প্রথম বাচ্চা হওয়ার পর দ্বিতীয় বাচ্চা নিতে গেলে নানা রকম সমস্যার মুখোমুখি হই। আবার আমরা অনেক সময় বুঝে উঠতে পারি না যে দ্বিতীয় বাচ্চা নেওয়ার সঠিক সময় কখন।
দ্বিতীয়-বাচ্চা-না-হওয়ার-কারণ
তাই আপনাদের সকল প্রশ্নের উত্তর নিয়ে আজকের এই পোস্টটি আলোচনা করা হবে। এছাড়াও বাচ্চা না হওয়ার কারণ কী এবং পুরুষের শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার এবং দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

সূচিপত্রঃ দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ গুলো আমরা অনেকেই জানি না। দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানা আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে।

যেমনঃ শারীরিক সমস্যা, থাইরয়েডের সমস্যা, গর্ভাশয়ের সমস্যা, হরমোনের সমস্যা, অবসাদ এবং মানসিক চাপ, অবস্থার পরিবর্তন এবং কিছু অজানা কারণ থাকতে পারে। নিচে দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ সমূহ উল্লেখ করা হলোঃ
  1. থাইরয়েড হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রা কম অথবা বেশি হলে গর্ভধারণে সমস্যা দেখা দিতে পারে।
  2. জরায়ুর কাঠামোগত সমস্যা বা অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ।
  3. Prolactin হরমোনের বৃদ্ধি পেলে গর্ভধারণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
  4. মানসিক চাপ এবং অবসাদ দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ।
  5. প্রথম সন্তানের জন্মের পর শরীরের পরিবর্তন এবং সময়ের সাথে সাথে প্রজনন ক্ষমতার পরিবর্তন।
  6. বয়সজনিত কারণে বিশেষ করে নারীদের ৩৫ বছর এবং পুরুষের ৪০ বছর বয়সের পর গর্ভধারণ ক্ষমতা অনেক কমে যায়। এটিও একটি অন্যতম কারণ।
এছাড়াও, আপনার স্বাস্থ্য এবং জীবনযাত্রার অভ্যাসও এই সমস্যাকে আরো বেশি প্রভাবিত করতে পারে।

দ্বিতীয় বাচ্চা নেওয়ার সঠিক সময়

দ্বিতীয় বাচ্চা নেওয়ার সঠিক সময় জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় সন্তান নেওয়ার সঠিক সময় নির্ধারণে ব্যক্তিগত পরিস্থিতি, স্বাস্থ্য এবং পরিবারের পরিকল্পনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধারণত প্রথম সন্তানের জন্মের পর ১৮ মাস থেকে ২ বছরের ব্যবধান রাখা উত্তম।

এতে করে মায়ের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের যথেষ্ট সময় পাওয়া যায়। খুব তাড়াতাড়ি গর্ভবতী হলে সেটা মায়ের ও শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়তে পারে। তবে দীর্ঘ ব্যবধানেও কিছু ঝুঁকি থাকতে পারে।

সুতরাং দম্পতিদের একজন বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। পারিবারিক অবস্থা, আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সন্তানদের মধ্যে বয়সের ব্যবধানও বিবেচনার বিষয়।

বাচ্চা না হওয়ার কারণ কী

বাচ্চা না হওয়ার কারণ কী এটা আমরা অনেকেই বুঝি না বা বুঝতে পারি না। নারী এবং পুরুষের নানা রকম সমস্যা বাচ্চা না হওয়ার অন্যতম কারণ। মহিলাদের ক্ষেত্রে অনিয়মিত মাসিক, ডিম্বাশয়ে সিস্ট, জরায়ু বা ডিম্বনালীর সমস্যা, এবং হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বাচ্চা না হওয়ার প্রধান কারণ।
দ্বিতীয়-বাচ্চা-না-হওয়ার-কারণ
পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া পুরুষের বাচ্চা না হওয়ার কারণ। উভয়ের ক্ষেত্রেই বয়স একটি বড় ফ্যাক্টর। অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, মদ্যপান, এবং মানসিক চাপও এই সমস্যা বাড়াতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না।

বন্ধ্যাত্বের সমাধানে সঠিক রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা জরুরি। জীবনযাত্রার পরিবর্তন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং নিয়মিত শারীর চর্চা এই সমস্যা সমাধানে সহায়ক হতে পারে। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও চিকিৎসা নেওয়া উচিত।

পুরুষের শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ

পুরুষের শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে অস্বাস্থ্যকর খাদ্য খাদ্যাভ্যাস এবং অনিয়মিত জীবনযাপন।

এছাড়াও অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ধূমপান পুরুষের শুক্রাণু কমে যাওয়ার প্রধান কারণ। অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, কিছু ধরনের ঔষধ সেবন, সংক্রমণ, অতিরিক্ত মানসিক চাপ এবং জন্মগত কিছু সমস্যা থাকতে পারে। আবার অনেক সময় শুক্রাণু কমে যাওয়ার কারণ জানা সম্ভব হয় না।

শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়ার ফলে গর্ভধারণে সমস্যা হয়। পুরুষের শুক্রাণু কমে গেলে দ্রুত এই সম্পর্কে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা জরুরি। সঠিক সময়ে চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধি করা সম্ভব।

পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ

পুরুষের বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ গুলো খুব নির্দিষ্ট ভাবে বলা সম্ভব না। তবে পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে। পুরুষের এই বন্ধ্যাত্বের লক্ষণ গুলো জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পুরুষের শুক্রাণু সাধারণত শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া, হরমোনের সমস্যা, শারীরিক সমস্যা, যৌন বা শারীরিক সমস্যা, অস্বাভাবিক শারীরিক লক্ষণ, অবসাদ এবং মানসিক চাপ এই লক্ষণ গুলো বিশেশভাবে লক্ষ্য করা যায়। নিচে এই লক্ষণ গুলো দেওয়া হলোঃ
  • পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা কম, গতি কম এবং আকৃতি অস্বাভাবিক হওয়া।
  • বীর্যে শুক্রাণু একদম না থাকা।
  • টেস্টোস্টেরন লেভেল কমে যাওয়ার কারণে কম যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া, অবসাদ, টেনশন এবং পেশীর দুর্বলতা।
  • পুরুষের শরীরে লোম কমে যাওয়া।
  • ইরেক্টাইল ডিসফাংশন যা শারীরিক ইন্টারকোর্সে নারীদের তৃপ্তি না দিতে পারা।
  • অন্ডকোষের সমস্যা যেমন ভ্যারিকোসেলের অন্ডকোষের শিরাগুলোর ফুলে যাওয়া।
  • অণ্ডকোষে ব্যথা, ফোলা বা শক্ত পিণ্ড যেমনঃ Varicocele বা টেস্টিকুলার টিউমার থাকা।
  • অণ্ডকোষ আকারে ছোট বা নরম হওয়াকে হাইপোগোনাডিজম বলে এবং এর কারণেও হতে পারে।
  • যৌন উত্তেজনা বা ইরেকটাইল ডিসফাংশন।
  • দীর্ঘমেয়াদী মানসিক চাপ বা অবসাদ এবং হতাশা কাজ করা।
এগুলো ছাড়াও, অনেক সময় পুরুষের বন্ধ্যাত্বের কারণ জানতে পারা যায় না। যদি আপনি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করতে পারেন, তাহলে একজন ভালো ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ।

পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায়

পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় সম্পর্কে জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ অনেক ক্ষেত্রে পুরুষের শুধুমাত্র ফার্টিলিটি টেস্ট করেই নির্ণয় সম্ভব। পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করতে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, মানসিক চাপ কমানো, অ্যালকোহল এবং ধূমপান পরিহার, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ঔষধের সেবন করা, অন্ডকোষের স্বাস্থ্য ভালো রাখা এবং কিছু অন্য চিকিৎসা পদ্ধতি বিশেষ ভাবে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। নিচে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার উপায় গুলো দেওয়া হলোঃ
  1. ধূমপান ও মদ্যপান খাওয়া বন্ধ করতে হবে। এইগুলো পুরুষের শুক্রাণুর সংখ্যা এবং শুক্রাণুর গতি কমইয়ে দেয়।
  2. অন্ডকোষের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। টাইট প্যান্ট পরা থেকে বিরত থাকা এবং অতিরিক্ত তাপ থেকে দূরে থাকা।
  3. শরীরের ওজন বাড়াতে হবে কারণ অতিরিক্ত পাতলা শরীর টেস্টোস্টেরন লেভেল কমায়।
  4. নিয়মিত এক্সারসাইজ, ইয়োগা অথবা হাঁটাহাঁটি করতে হবে।
  5. মানসিক চাপ কমাতে হবে কেননা অতিরিক্ত চিন্তা যৌন ক্ষমতা কমায়। মেডিটেশন বা কাউন্সেলিং করলে ভাল হয়।
  6. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। এইগুলো শরীরের শুক্রাণুর জন্য অনেক উপকারী।
  7. ভিটামিন C থাকে এমন কিছু যেমনঃ লেবু, আমলকী, কিউই এবং ভিটামিন E সমৃদ্ধ বাদাম, অ্যাভোকাডো খেলে ভালো হয়।
  8. জিংক যুক্ত খাবার যেমন কুমড়ার বীজ, মাংস এবং ডাল এইগুলো শুক্রাণুর গুণমান বাড়ায়।
  9. ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত খাবার যেমন ফ্ল্যাক্সসিড, চিয়া বীজ, ফ্যাটি ফিশ খেলে শুক্রাণু মান ভালো হয়।
  10. আশ্বগন্ধা স্ট্রেস কমায় ও টেস্টোস্টেরন বাড়ায়।
  11. শিলাজিৎ শুক্রাণুর সংখ্যা ও শক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
যদি শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যায় বা অন্য কোনো সমস্যা থাকে, তাহলে একজন ইউরোলজিস্টের সাথে পরামর্শ করা উচিত। তারা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা এবং চিকিৎসা করতে পারবেন। কিছু ক্ষেত্রে, চিকিৎসকরা হরমোনাল থেরাপি বা অন্য ঔষধ সেবন করার জন্য দেওয়া হয়।
যা শুক্রাণুর উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে আইভিএফ বা আইসিএসআই এর মসধ্যমে গর্ভধারণ করা সম্ভব এবং পুরুষের বন্ধ্যাত্ব দূর করার বিকল্প উপায়।

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার পেছনে রয়েছে নানা শারীরিক, হরমোনাল সহ নানারকম সমস্যা জড়িয়ে রয়েছে। নিচে দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার নিচে আলোচনা করা হলো।
দ্বিতীয়-বাচ্চা-না-হওয়ার-কারণ

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার প্রধান কারণসমূহ:
  • বয়সজনিত কারণে মহিলাদের বয়স ৩৫ বছরের বেশি হলে ডিম্বাণুর সংখ্যা ও গুণগত মান কমে যায় এবং পুরুষদের বয়স ৪০ বছরের বেশি হলে শুক্রাণুর সংখ্যা হ্রাস পায়।
  • শারীরিক সমস্যা মহিলাদের ক্ষেত্রে ফ্যালোপিয়ান টিউব ব্লকেজ, এন্ডোমেট্রিওসিস, পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS), জরায়ু বা ডিম্বাশয়ে সার্জারির করা দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ।
  • পুরুষদের ক্ষেত্রে ক্রাণুর কম সংখ্যা বা নিম্ন গুণমান, ভেরিকোসিল অণ্ডকোষের শিরা ফুলে যাওয়া এবং হরমোনাল ভারসাম্যহীনতা দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ।
  • ধূমপান ও মদ্যপান, অতিরিক্ত ওজন, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ এবং অপুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাসের কারণেও দ্বিতীয় বাচ্চা নাও হতে পারে।
দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার প্রতিকার:
  • মহিলাদের মেডিকেল টেস্ট হরমোন প্রোফাইল (FSH, LH, AMH, HSG টেস্ট (ফ্যালোপিয়ান টিউব পরীক্ষা) এবং আল্ট্রাসাউন্ড ডিম্বাশয় ও জরায়ু পরীক্ষা করতে হবে।
  • পুরুষদের মেডিকেল টেস্ট সিমেন অ্যানালাইসিস এবং হরমোন টেস্ট টেস্টোস্টেরন ও প্রোল্যাকটিন পরিক্ষা করতে হবে।
  • ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে।
  • পুষ্টিকর খাবার প্রোটিন, আয়রন, জিংক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যুক্ত খাবার খেতে হবে।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।
  • স্ট্রেস কমাতে হবে।
দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার সমস্যায় দম্পতিদের একসঙ্গে চিকিৎসা নেওয়া জরুরি। প্রায় ৪০% ক্ষেত্রে সমস্যা যৌথভাবে নির্ণয় হয়। সময়মতো চিকিৎসা নিলে ৬০-৭০% ক্ষেত্রে সফলতা পাওয়া যায়।

দ্বিতীয় বাচ্চা না হলে কি করতে হবে

দ্বিতীয় বাচ্চা না হলে কি করতে হবে জানতে চান? কিছু শারীরিক সমস্যার কারণে দ্বিতীয় বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। আর এর কারণ খুঁজে পেতে অনেক সময় অনেক বেশি ক্ষতি হয়ে যায়। দ্বিতীয় বাচ্চা না হলে মেডিকেল চেকআপ করতে হবে, জীবনযাত্রার পরিবর্তন, ফার্টিলিটি ট্রিটমেন্ট এবং বিকল্প পথ অবলম্বন করা জরুরি। দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার সমস্যায় নিচের পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা উচিত।
  • স্ত্রী ও স্বামী উভয়ের ফার্টিলিটি টেস্ট করতে হবে যেমনঃ সিমেন অ্যানালাইসিস, হরমোন টেস্ট, অলট্রাসাউন্ড ইত্যাদি)।
  • স্ত্রীর অভুলেশন টেস্ট ডিম্বস্ফোটন ঠিকমতো হচ্ছে কি না এবং ফ্যালোপিয়ান টিউব প্যাটার্নি চেক করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
  • ধূমপান মদ্যপান ত্যাগ করতে হবে।
  • পুষ্টিকর খাবার প্রোটিন, আয়রন, জিংক, ভিটামিন সি/ই খেতে হবে।
  • স্ট্রেস কমাতে ইয়োগা, মেডিটেশন করতে হবে।
  • ওভুলেশন ইন্ডাকশন Clomid বা Letrozole। আইইউআই (IUI) বা আইভিএফ (IVF)-এর মতো অ্যাসিস্টেড রিপ্রোডাক্টিভ টেকনোলজির সাহায্যে বাচ্চা নেওয়া সম্ভব।
  • যদি টিউব বা ভেরিকোসিল সমস্যা থাকে তাহলে সার্জারি করতে হবে।
  • বিকল্প হিসেবে অ্যাডপশন বা সারোগেসি নিয়ে দ্বিতীয় বাচ্চা নিতে পারেন।
সুতরাং যদি ১ বছর চেষ্টার পরও সাফল্য না এলে ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেয়া জরুরি।

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার লক্ষণ

দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার লক্ষণ সম্পর্কে জানতে চান? দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার লক্ষণ গুলো নারীদের এবং পুরুষদের দুইজনের মধ্যেই প্রকাশ পায়। দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা দিতে পারে। নিচে দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার লক্ষণ গুলো উল্লেখ করা হলো।

নারীদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার লক্ষণঃ
  • অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক
  • ডিম্বস্ফোটন না হওয়া এবং মিডসাইকেল পেইন বা ফার্টাইল মিউকাসের অভাব।
  • সিজারিয়ান বা জটিল প্রসবের ইতিহাস থাকলে।
  • পূর্বে গর্ভপাত বা এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির ইতিহাস থাকলে।
  • এন্ডোমেট্রিওসিস এর লক্ষণ অতিরিক্ত ব্যথাযুক্ত পিরিয়ড, যৌন মিলনে ব্যথা থাকা।
  • পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) এর উপসর্গ ওজন বৃদ্ধি, মুখে অতিরিক্ত লোম উঠা।

পুরুষদের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার লক্ষণ
  • যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়া।
  • ইরেকশন বা বীর্যপাত সংক্রান্ত সমস্যা থাকা।
  • অণ্ডকোষে ব্যথা বা ফোলাভাব থাকলে।
  • প্রথম সন্তানের পর কোনো আঘাত বা সার্জারি করা থাকলে।
এছাড়াও অকারণ ওজন বৃদ্ধি বা হঠাৎ হরমোনাল পরিবর্তন দ্বিতীয় বাচ্চা হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে। দীর্ঘস্থায়ী রোগ ডায়াবেটিস, থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে না থাকা অন্যতম লক্ষণ।

শেষ কথাঃ দ্বিতীয় বাচ্চা না হওয়ার কারণ

পরিশেষে বলা যায় যে দ্বিতীয় সন্তান না হওয়ার পেছনে শারীরিক, হরমোনাল ও জীবনযাত্রাজনিত নানা কারণ কাজ করে। বয়স বৃদ্ধি, ডিম্বাণু বা শুক্রাণুর গুণগত সমস্যা, ফ্যালোপিয়ান টিউব বন্ধ থাকা, PCOS, থাইরয়ড বা ডায়াবেটিসের মতো রোগ, অতিরিক্ত টেনশন, অস্বাস্থ্যকর অভ্যাস এ সবই প্রধান ভূমিকা রাখে।

তবে আশার কথা হলো, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সঠিক চিকিৎসা ও জীবনযাপনের পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। সময়মতো ফার্টিলিটি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালে বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা বহু গুণে বেড়ে যায়। ধৈর্য্য ও সঠিক পদক্ষেপই পারে কাঙ্ক্ষিত সন্তানসুখ এনে দিতে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url